নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১দল।বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিরোধী জোটের পক্ষে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আগের
দিন কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ
গ্রেপ্তার হওয়ার পর এদিন কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন বার
কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব। তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সহ
দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান।
দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান।
নিজের বসুন্ধরার বাড়িতে এই
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অবরোধ শুরুর আগের দিন মঙ্গলবার সারাদেশে বিক্ষোভের
কর্মসূচির ঘোষণাও দেন। ‘গণতন্ত্র অভিযাত্রা’য় বাধা দেয়ার প্রতিবাদে এই
কর্মসূচি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পরবর্তী কর্মসূচি না দেয়া পর্যন্ত ১ জানুয়ারি বুধবার থেকে সারাদেশে
অবিরাম রাজপথ-রেলপথ-নৌপথ অবরোধ চলবে।
৫ জানুয়ারির দশম
সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থানে বিএনপির একের পর এক নেতাকে
আটকের মধ্যে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করল খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন বিরোধী
জোট।
খন্দকার মাহবুব বলেন, “সরকার একতরফাভাবে নির্বাচন
করার পথে এগুচ্ছে। বিরোধী দলকে কোনো সমাবেশ করতে দিচ্ছে না, নেতা-কর্মীদের
গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
“গণতন্ত্রের অভিযাত্রার কর্মসূচি
করতে দেয়া হয়নি। বিরোধীদলীয় নেতাকে তার বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
এভাবে সরকার দেশটাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।”
“এই অবস্থায়
আমরা ১৮ দলীয় জোট একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচনের বিরুদ্ধে ১ জানুয়ারি থেকে
অবরোধ কর্মসূচি পালনের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি,” বলেন তিনি।
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ১৮ দল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর অবরোধের ডাক দেয়।
সংঘাতময়
পাঁচ দফা অবরোধে প্রায় একশ’ মানুষ নিহত হওয়ার পর গত মঙ্গলবার বিরোধীদলীয়
নেতা খালেদা জিয়া নির্বাচন প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে ২৯ ডিসেম্বর ‘ঢাকামুখী
অভিযাত্রা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধায় বিএনপি চেয়ারপারসন এই কর্মসূচির জন্য
বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি। পুলিশের ব্যাপক তৎপরতায় রাজপথে নামতে পারেনি
কর্মীরাও।
এর প্রতিবাদে সোমবার দ্বিতীয় দিনের
জন্য ঢাকামুখী কর্মসূচি দিলেও তা পণ্ড করে দেয় সরকার। এর মধ্যে রোববার
সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার হন ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ, সোমবার খালেদার
বাড়ির সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন
চৌধুরীকে।
এই দুজনকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে খন্দকার
মাহবুব বলেন, “বিজয়ের মাসে দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে পুলিশ গ্রেপ্তার
করেছে। এর মাধ্যমে সরকারের ফ্যাসিস্ট চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে।”
বিএনপি
দাবি করে আসছে, নির্দলীয় সরকারের দাবিতে তাদের প্রতি জনগণের সমর্থন রয়েছে।
অন্যদিকে এই আন্দোলনে জনসমর্থন নেই দাবি করে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন করার
বিষয়ে অনড় অবস্থান নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।