স্বস্তির বৃষ্টি, অস্বস্তির ঝড়, ১৪ জনের প্রাণহানি - Get Latest Bangla News Online । Shahoj Kichhu

Breaking

Home Top Ad

Post Top Ad

Saturday, April 07, 2012

স্বস্তির বৃষ্টি, অস্বস্তির ঝড়, ১৪ জনের প্রাণহানি

বেশ কয়েক দিনের টানা ভাপসা গরমের পর ছিটেফোঁটা বৃষ্টিতে কি আর মন ভরে? প্রকৃতিও বুঝি বুঝেছে রাজধানীবাসীর প্রত্যাশা। তাই বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ছিল মন ভালো করা ভেজা বাতাস। কোথাও কোথাও ভোরে বৃষ্টিও হয়েছে দুই-এক পশলা। আর শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে আগাম কালবৈশাখী। অবশ্য ঝড়ের ঝাপটা মৃদু হলেও বৃষ্টি হয়েছে দেদার।
স্বস্তির বৃষ্টিতে কোথাও কোথাও আবার দুর্ভোগ হয়েছে। পঞ্চগড়, নীলফামারী, নোয়াখালী, যশোর, ফরিদপুর, সিলেট, কুমিল্লা চুয়াডাঙ্গায় ঝড়ে ঘরচাপা পড়ে বজ্রাঘাতে ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

সকাল সাড়ে ৮টার পর থেকেই রাজধানীর ওপর দিয়ে বইতে শুরু করে ঝোড়ো বাতাস। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় বৃষ্টি। সকাল ৯টা নাগাদ ঘোর বর্ষার রূপ নেয় প্রকৃতি। হঠাৎ করেই বৃষ্টি থেমে গিয়ে আকাশে মেঘ জমে চারদিক আঁধার হয়ে আসে। সকাল সাড়ে ৯টায় দ্বিতীয় দফায় শুরু হয় তুমুল বর্ষণ। কোথাও কোথাও বজ্রসহ বৃষ্টিও হয়। ঝুম বৃষ্টিতে কিছু সময়ের মধ্যে ডুবে যায় নগরীর বেশ কিছু এলাকার রাস্তাঘাট।
সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন থাকায় বৃষ্টিতে নগরবাসীকে খুব বেশি নাকাল হতে হয়নি। তবে যারা বাজারসদাই বা জুমার নামাজ আদায়ে বের হয়, তাদের সঙ্গী করতে হয়েছে ছাতা। প্রায় সবখানে দুপুর পর্যন্ত ছিল মাঝারি থেকে টিপটিপ বৃষ্টি। দিনমজুরদের কাজের হাটগুলোতে জবুথবু হয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। তাদের চোখে-মুখে দেখা গেছে বিষণ্নতা। একেকটি বৃষ্টির দিন অনেকের জন্যই পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে কাটানোর দিন।
আবহাওয়া অফিস জানায়, ঢাকায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৫ দশমিক ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুক্রবারসহ পরপর তিন দিন এমনই ঝোড়ো হাওয়া বৃষ্টিপাত হতে পারে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। সেই সঙ্গে থাকতে পারে বজ্রসহ দমকা হাওয়া। গতকাল ঝড়বৃষ্টির সময় প্রতিঘণ্টায় দক্ষিণ দিক থেকে ১৩ মাইল বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৭১ শতাংশ। আজ শনিবার বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে ২১ দশমিক ৩৪ মিলিমিটার। ঘণ্টায় ১০ মাইল বেগে দক্ষিণ দিক থেকে বাতাস বইতে পারে এবং আর্দ্রতা থাকতে পারে ৭৩ শতাংশ।
আগামীকাল রবিবার দশমিক শূন্য মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১২ মাইল বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। আর্দ্রতার পরিমাণ থাকবে ৭৮ শতাংশ। সময় সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আগামী থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সময় দেশে প্রচণ্ড বজ্রবৃষ্টি কালবৈশাখী হতে পারে। ছাড়া ১৫ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক ৪৩ থেকে এক মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। সময় খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, সিলেট চট্টগ্রাম বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। ছাড়া দেশের অন্যত্র আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আমাদের ঢাকার বাইরের নিজস্ব প্রতিবেদক প্রতিনিধিরা জানান, কালবৈশাখীতে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বোদা ইউনিয়নের মাঝগ্রামের ছলেমান আলীর চার মাস বয়সী শিশুকন্যা ছাবিহা ঘরচাপা পড়ে এবং কাজলদীঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের কালীয়াগঞ্জ কুচিয়ামোড় গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে মিজানুর রহমান () মা মরিয়ম বেগম (৮০) বজ্রাঘাতে মারা যান।
ছাড়া নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচণ্ডী ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের গৃহবধূ আমেনা বেগম (৫৫), নোয়াখালী সদর উপজেলার রাজাপুরের রেহানিয়া এলাকার নাজমা আক্তার (১৪), হাতিয়া উপজেলার সুবর্ণচরের চর আমিনুল হক গ্রামে পারভিন আক্তার চর মহিউদ্দিন গ্রামে মো. সুমন (১১), যশোরের কেশবপুর উপজেলার আড়ুয়া গ্রামের সুরেন শীল (৬০), একই উপজেলার ভরতভায়না গ্রামের হারুন মোল্লা (৪০) বজ্রাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীর সাইঞ্চারপাড় গ্রামের শ্রমিক রহিম বাদশার স্ত্রী আসমা বেগম (৩৮), ফরিদপুর সদর উপজেলার চর মাধবদিয়া ইউনিয়নের খলিল মণ্ডলের হাট এলাকার মো. জাহিদ আলী (৩০), চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হেমায়েতপুর গ্রামের কৃষক আবদুর রশিদ (৪৫), কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের কৃষক লিটন মিয়া (৩৫) এবং সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার গোরাপুর হাওরে আবদুল বারী (৬০) বজ্রাঘাতে নিহত হন

Post Bottom Ad